আমার কলম

“বিবেক” একজন মানুষের নিকট সবচেয়ে বড় আদালত

একটি খুব সাধারণ প্রশ্ন আপনার কাছে – বলতে পারেন আদালত কত প্রকার?
পানির মত সহজ করে বলে দিতে পারেন 5 প্রকার ।
আমি এই বিষয়টিকে একটু অন্য ভাবে ভাবি… দুঃখিত হয়ত অনেকেই অনেক রকম ভেবে থাকে। আমরটা এবার বলি..
পৃথিবীর বুকে যত প্রকার আদালত রয়েছে সবগুলোকে আমি একটি নাম দিলাম- “জনমত আদালত” আরেকটি দিলাম “বিবেক বা মন আদালত” এবং শেষ টি আপনিও জানেন “আল্লাহর আদালত” ।
জনমত আদালত হল সেটাই যা মানুষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে… এটি একটি তুচ্ছ ঘটনাকে নিয়েও তৈরি হতে পারে, মানে হলো- যেখানে সাক্ষি, বিচারক ও অপরাধী বলে যাকে মনে করা হচ্ছে এই কয়েকজন থাকলেই সেটি একটি আদালত হতে পারে। এছাড়া দায়রা আদালত, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ২য় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ৩য় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ইত্যাদি ইত্যাদি তো থাকছেই.. এই সবই হল জনমত আদালত। সব রায় যে এখানে শতভাগ সঠিক হয় তা কিন্তু নয়। এখানে বিনা দোষেও কেউ সাজা পায় আবার অপরাধিও খালাশ পায়। আবার আপনার যদি অনেক টাকা-পয়সা অথবা ক্ষমতা থাকে তাহলে রায় টা আপনার দিকেই চলে যাবে তবে সব সময় তেমন যে ঘটে তা নয়। এখানে বিচারকের চেয়ারে যিনি বসেন তিনিই রায় দেন । আর কখনো এই রায় সঠিক হয় আবার কখনো ভুল হয়। অনেক সময় দেখা যায় বিনা অপরাধী হবার পরেও সক্ষি না থাকায় দোষি সাব্যস্ত হতে হয়।
এবার পরের আদালত টিতে আসা যাক, এটি খুব সাদামাটা একটি আদালত.. একদম নিরব… 100% সঠিক রায় দেওয়া হয় এখানে । আর এখানে বিচারক, উকিল, সাক্ষী ও বাদি/বিবাদী শুধু একজন আর সে হল- “আপনি”। আপনি যখন একটি অপরাধ করেন তখন রায় পক্ষে থাকলেও আপনি আপনার মনের কাছে থেকে শান্তি পাবেন না। পৃথিবীর সকল আদালত আপনাকে নির্দোষ রায় দিলেও আপনি কিন্তু আপনার কাছে কখনোই নির্দোষ হতে পারবেন না। আর এই বিষয়টি আপনি কখনোই ভুলতে পারবেন না। আপনার মন আপনাকে বারং বার সেই ভুলের বিষয়টি মনে করিয়ে দেবে। আপনি কখনোই আপনাকে নির্দোষ ভেবে শান্তি পাবেন না। সেই বিষয়টি আপনি ভুলে থাকতে চাইলেও পারবেন না… মাঝে মাঝে সেই বিষয়টি আপনাকে আঘাত দেবে। নিজেকে অপরাধী ভেবে নিজের প্রতি একসময় বিশ্বাস হারিয়ে ফেলবেন। সবশেষ ফলাফল আপনি আপনার সফলতাকে মাটিচাপা দিচ্ছেন। আর শয়তান আপনাকে দিয়ে আরও বড় অপরাধে জড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এবার তৃতীয় ও শেষ আদালতের কথা বলছি- এই আদালতকে অস্বীকার করার মত কিছুই নেই । শুধু একটা বড় পার্থক্য হল – বেঁচে থাকতে তো আর সেই শাস্তি পেতে হবে না তাই তো? আপনার ভাবনা টা ভুল, আল্লাহ্ পাক অনেক কিছুরই শাস্তি ইহকালেই দিয়ে দেন। আর পরকালে তো ভয়ানক শাস্তি অপেক্ষা করছেই। আপনি যদি সত্যি অপরাধী হয়ে থাকেন তবে আপনাকে এই তিনটি আদালতেই শাস্তি পেতে হবে। তবে এখানে কিছুটা শিথিলতা আছে আর সেই টা পাওয়ার পথ হল ক্ষমা.. । আপনি যাহার নিকট অপরাধ করিয়াছেন তহার নিকট যদি ক্ষমা চান তবে আল্লাহ্ আপানাকে ক্ষমা করিয়া দেবেন। আর তা যদি না হয় তবে দুনিয়াতেও আপনি নানা প্রকার বিপদ-মসিবতে থাকবেন এবং পরকালেও আপনাকে কঠিন আজাব ভোগ করতে হবে, আর বোনাস হিসাবে তো মন থেকে ধিক্কার পাবেনই।
পৃথিবীতে আমার-আপনার স্থায়ীত্বটা খুব অল্প সময়ের। নামাজে বসে ডান কাঁধে ছালাম দিয়ে বাঁম দিকে ফেরার আগেই হয়ত আপনার মৃত্যু নসিব হয়ে যেতে পারে । কিসের এত বাহাদুরী করেন এই দুনিয়া নিয়ে? কোন লাভ আছে? প্রথম কমেন্ট কিছু ভিডিও দিয়ে দেব দেখার অনুরোধ রইল।
আপনার জন্ম হল মানে একটি টিকিট নিয়ে একটি প্লাটফর্মে উপস্থিত হলেন। ঐ টিকিটেই আপনার চলে যাবার সময় উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে শুধু সময় টা আপনি দেখতে পাচ্ছেন না, তবে যেতে হবে এটা বুঝতে পারছেন। আর যেখানে যাবেন সেখানে ভাল করে থাকার জন্য আপনাকে কিছু সন্জয় করতে হবে, আর তা প্লাটফর্ম থেকেই সন্জয় করতে হবে। এখন ভাবুন কেন সেই প্লাটফর্ম কে সাজাতে এত ব্যস্ত আপনি? অাপনি কেন বুঝতেছেন না এখানে আপনার স্থায়ীত্বটা কিছু সময়ের । যেখানে আপনি যাবেন সেখানকার জন্য কিছু সন্চয় করুন। এটা অস্থায়ী আর যেখানে যাবেন সেখানটাই স্থায়ী।
পৃথিবীতে যত দিন আছেন আল্লাহর দেওয়া ইসলামী পথ অনুসরণ করুন। মিথ্যা কে বর্জন করুন, কারণ একটি মিথ্যাকে ঢাকতে আরও অনেক অনেক বেশি মিথ্য কথা আপনাকে বলতে হবে।
আল্লাহ্ তাআলা আমাদের সকলকে হেদায়েত নসিব করুন। আমিন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button